সমাজের আলো : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইউপি নির্বাচনে ১২ টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে আওয়ামীলীগের গোটা কয়েক নেতা কর্মীরা। অধিকাংশ নৌকার প্রার্থীদের ঘোর বিরোধীতা করেছেন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কিছু নেতা কর্মী এমনই অভিযোগ প্রার্থীদের।বর্তমান জরিপে (২৮ নভেম্বর) নির্বাচনে ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ৩ টিতে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হতে পারে বলে ধারণা করছেন সচেতন মহল।কালিগঞ্জে আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দলের কারণে ‘বিদ্রোহী’ বিএনপি ও জামাতের প্রার্থীদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারে নৌকার মাঝিরা।আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, অধিকাংশ ইউনিয়নে গোপনে দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে কাজ করেছেন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীসহ কয়েকজন নেতা কর্মী।তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কালিগঞ্জে নৌকার প্রার্থীদের মতামত তুলে ধরা হলো,
কৃষ্ণনগর ইউপিতে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন যুবমহিলা লীগের সভাপতি শ্যামলী রাণী অধিকারি বলেন, তার বিপক্ষে অধিকাংশ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। এমনকি উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নাঙ্গল প্রতিকের সাফিয়া পারভীনকে বিজয়ী করতে গোপনে কাজ করে চলেছেন।বিষ্ণুপুরে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিয়াজ উদ্দিন জানান, তার পক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সকল নেতা কর্মীরা কাজ করছেন। তবে আওয়ামী লীগের নামধারী কিছু লোকজন তার বিরোধীতা করছে বলে জানান তিনি।চাম্পাফুলে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক গাইন বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতা কর্মীরা তার পক্ষে কাজ করছেন। তবে কিছু নেতা কর্মীরা সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ শ্রীপুরে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মী, ছাত্রলীগের ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নৌকার বিরোধীতা করছে। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি প্রকাশ্য তার বিরোধীতা করেছেন। সাঈদ মেহেদী নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী প্রাশান্ত কুমার সরকারের পক্ষে কাজ করছেন। এমনকি দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন বিভিন্ন সমাবেশে প্রশান্তের ঘোড়া প্রতীকের ভোট চাইছেন তিনি।কুশুলিয়া ইউপিতে নৌকার প্রার্থী শেখ আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা প্রায় শতভাগ তার পক্ষে কাজ করছেন।নলতায় ইউনিয়নে নৌকার মাঝি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীরা বিএনপির ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আজিজুর রহমানের পক্ষে কাজ করছেন।
তারালী ইউপিতে নৌকার মাঝি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট বলেন, কয়েকটি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তার বিপক্ষে কাজ করছেন।এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।ভাড়াশিমলায় ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক তার বিরোধীতা করছে।মথুরেশপুরে নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ বলেন, উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সকল নেতা কর্মীরা তার পক্ষে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।ধলবাড়িয়া নৌকার মাঝি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জী জানান, অধিকাংশ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করছেন। তবে সাঈদ মেহেদী গোপনে সতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের গাজী শওকত হোসেনের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রতনপুরে নৌকার মাঝি এম আলিম আল রাজি টোকন বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা কর্মীরা তার বিরোধীতা করছেন।মৌতলা নৌকার মাঝি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন জানান, তার ইউনিয়নের গোটা কয়েক জন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা নৌকার বিরোধীতা করেছে। এর মধ্যে প্রশান্ত নামে একজন বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা ঘোড়া প্রতীকের ফেরদাউস মোড়লের পক্ষে ভোট চাইছেন।স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ছেলে মথুরেশপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি তার ছেলের জন্য নিজের ইউনিয়নে প্রচার প্রচারণা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এজন্য অন্য কোন ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা অংশ গ্রহণ করতে পারছেননা তিনি।
এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট তারালী ইউপিতে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। এজন্য তিনি নিজের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্য নেতা কর্মীরা বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে সমাবেশে অংশ গ্রহণ করছেন।আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর মনোনিত প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন না পাওয়ায় জামাত বিএনপি ও সতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ী করতে গোপনে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সমাবেশে নৌকার প্রার্থীদের জন্য ভোট চাইছেন। কিন্তু গোপনে নৌকার ভরাডুবির নীল নকশা আঁকছেন তিনি।এবিষয়ে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী জানান, আমি নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছি। দিন রাত নৌকার পক্ষে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করে চলেছি। নৌকার প্রার্থীদের পিছনে এই পর্যন্ত আমি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করেছি। তারপরও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে অনেক প্রার্থীরা। এলাকায় জনপ্রিয়তা নেই যেসব নৌকার প্রার্থীর তাদের ব্যর্থতার

