সমাজের আলো : দুর্নীতির আখড়াখানা নামে পরিচিত আশাশুনি উপজেলার চেচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে দশটি শূন্যপদে তড়িঘড়ি করে শিক্ষক ও কর্মচারী নিযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র-ছাত্রীর থেকেও অধিক শিক্ষক থাকার পরেও নতুনভাবে সকল পদে কোটি টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারীর নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন তারা।

অভিভাবক সদস্য কচুয়া গ্রামের আব্দুল বারীর সরদারর ছেলে মো: ইউছুপ সরদার, মৃত তমেজ সানার ছেলে আবু দাউদ সানা ও হুমায়ন কবিরের ছেলে তুহিন জানান, চেচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসাটি দুর্নীতির আখড়াখানা হিসেবে পরিণত হয়েছে। মাদ্রাসার ইফতেদায়ী, দাখিল, আলিম ও ফাজেল সেকশনে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা মাত্রাতিরিক্তভাবে কম থাকায় পাশের একটি মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রীদেরকে এফতেদায়ী সেকশনের ছাত্রী হিসেবে দেখানো হয়েছে। তারা আদৌ চেচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নয়।

বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী থেকেও শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা অনেক বেশি হয়েছে। শুধু তাই নয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্থানীয় সরদার বাড়ির আট সদস্যকে অন্তর্ভুক্তি করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি মাওলানা তৈয়েবুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতা মামলা, অভিভাবক সদস্য মো: আখতারুজ্জামান ও মোহাম্মদ শফিউল হাসানের কোন ছেলে মেয়েই উক্ত মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত নয় এবং বিদ্যোৎসাহী সদস্য এনামুল হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে নাশকতা মামলাসহ একাধিক মামলা। অর্থাৎ আটজনের মধ্যে চারজন বিভিন্ন রয়েছে সরকার পতনের মামলা এবং অন্যান্যদের কোন সন্তানই অত্র প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত নয়। তারা আরো বলেন, দশটি পদে অবৈধ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিরুদ্ধে এনামুল হোসেন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমান মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।এ সকল মামলা উপেক্ষা করে পত্রিকায় দশটি শূন্যপদে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটি ইতিমধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি ম্যানেজ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিয়োগ প্রয়োগক্রিয়া সম্পন্ন করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে নিয়োগ বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় কিভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং নিয়োগ দেওয়া হবে এমন প্রশ্ন এলাকার সচেতন মহলের। তথ্য অনুসন্ধ্যানে চেচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা বলেন, ক্লাসে উপস্থিত না থাকলেও খাতা কলমে আমাদের কোন শিক্ষার্থী কমতি নেই। নিয়ম অনুযায়ী আমাদের শিক্ষার্থী সম্পন্ন আছে। মাদ্রাসার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার জানামতে নিয়োগ বোর্ডের বিরুদ্ধে কোন মামলা চলমান নেই। নিয়ম মেনেই নিয়োগ প্রয়োক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাও: ওলিউল¬াহ বলেন, তাদের নামে ব্যক্তিগর্ত মামলা থাকতে পারে। তবে অত্র প্রতিষ্ঠানের অর্থ তছরুপ বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লি¬ষ্ট কোন অভিযোগ বা মামলা তাদের নামে নেই। তাছাড়া ম্যানেজিং কমিটির প্রত্যেক সদস্যের সন্তানরা অত্র প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত রয়েছে। তবে স্থানীয় একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার বৃথা চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের উপস্থিতির থেকেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বেশি করতে এবং অত্র প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে বিষয়টি আমলে নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে সংশ্লি¬ষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।




Leave a Reply

Your email address will not be published.