সমাজের আলো : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ভাতাভোগী ১৩৫ জনের তথ্য গোপন করে ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ভাতাভোগী মৃত ব্যক্তিদের বিপরীতে ভুয়া নমিনি দেখিয়ে এ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতার জোগসাজশে ভাতাভোগীদের এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ভাতাভোগী ১৩৫ জনের তথ্য গোপন করে ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ভাতাভোগী মৃত ব্যক্তিদের বিপরীতে ভুয়া নমিনি দেখিয়ে এ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতার জোগসাজশে ভাতাভোগীদের এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান।

সরেজমিনে গিয়ে গত রবিবার উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের (৫ নম্বর ওয়ার্ড) গণেশপুর গ্রামে গিয়ে কথা হয় মুক্তিযোদ্ধা মো. আনছার আলী গাজীসহ শতাধিক সরকারি ভাতাভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। মুক্তিযোদ্ধা মো. আনছার আলী জানান, তাঁর মা সফুরা বিবি (বই নং-২৩৬, ব্যাংক হিসাব নং-৫৬৮৮৮) পাঁচ বছর আগে মারা যান। মারা যাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেন গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বয়স্ক ভাতার কার্ডটি নিয়ে যান। এর পর থেকে তিনি প্রতি মাসে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে ভুয়া নমিনি দেখিয়ে ভাতার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন। গত সপ্তাহে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ইউপি মেম্বারের মাধ্যমে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে হুমকি দেন।ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের আহম্মদ গাজী, নুর ইসলাম, আয়নাল গাজীসহ অনেকে জানান, ভাতাভোগী অসহায় বয়স্ক বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তারা মারা যাওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার ও মেম্বাররা এক সপ্তাহের মধ্যেই ভাতার কার্ড নিয়ে যান। পরে তাঁরা সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে নিয়মিত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খায়রুল আলম তেড়ে আসেন, হুমকি দেন।

ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ওয়ার্ডেই ১০ থেকে ২০ জন করে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও বয়স্ক ভাতার টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নেওয়া হচ্ছে। অথচ ওই ব্যক্তিরা তিন থেকে পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন। তাঁদের নামের বিপরীতে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সুপারিশে ইউপি চেয়ারম্যান এসব টাকা উত্তোলন করে আসছেন।এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন ইউপি সদস্য ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুছ সাহাদাত রাজা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান গত দুই টার্ম দায়িত্ব পালন করছেন। ভাতাভোগীদের কেউ মারা গেলে সেই ওয়ার্ডের অন্য কোনো ব্যক্তির নাম নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করার নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান তা না করে মৃত ব্যক্তির নমিনি সাজিয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ে সুপারিশ করেন। মাসের পর মাস এমন ঘটনা ঘটছে। তা ছাড়া সরকারি ভাতা পাওয়ার জন্য ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ জন গরিব ও অসহায় মানুষ চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু সেসব আবেদন জমা দেওয়া হচ্ছে না।ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জি জানান, ইউনিয়নের ১৩৫ জন মৃত ব্যক্তির নামে ভাতার টাকা ওঠানো হচ্ছে। তিনি ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য খায়রুল আলম বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ভাতাভোগীদের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কার্ডপ্রতি তিন মাসে একত্রে চার হাজার ৫০০ টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published.