ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া সাতক্ষীরা: হার্ড ও কিডনি বিকল হয়ে বাবার মৃত্যুর পরে ভ্যান চালিয়ে সংসারের খরচ যোগানো সাতক্ষীরা কলারোয়ার ১২ বছর বয়সী সেই ছোট্ট শিশু ফাহিমের পরিবারকে ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান উপহার দিল ‘আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরা৷ রবিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কলাগাছি মোড় জুরমত আলীর গ্যারেজে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশন’ এর কলারোয়া উপজেলা টিমের সমন্বয়কারী ফারুক হোসাইন রাজের তত্ত্বাবধানে উপহারের ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকানটি ফাহিমের মা নারগিস সুলতানার নিকট হস্তান্তর করেন প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু৷ ফাহিম হোসেন (১২) উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের শুভঙ্করকাটি গ্রামের মৃত ছাত্তার মোল্লার ছেলে৷ উপহারের ফলের দোকানটি পেয়ে ফাহিমের মা নারগিস সুলতানা বলেন, অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে স্বামীর মৃত্যু হয়৷ পরে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে পরিবারে দ্বিতীয় আয়ের কোন ব্যাক্তি না থাকায় খুব অসহায়ত্বে দিন কাটাচ্ছিলাম৷ এমনই সময় পাশে এসে দাঁড়ালো ‘আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশন’৷ কয়েকবার চাল, ডাল, তেল, সবজি নতুন পোশাক সহ বিভিন্ন উপহার পেয়েছি কিন্তু সংগঠনের পক্ষ আজ পরিবারের আর্থিক সংকট মেটানোর জন্য এত বড় একটা ( ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান) উপহার পাবো আমরা কখনো ভাবিনি৷

এসময় তিনি চোখের পানি ফেলে আরও বলেন, ফাহিমের আর রাস্তায় ভ্যান চালাতে হবেনা৷ এখন অনেক সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবো৷ চিরদিন দোয়া করি সংগঠনের প্রত্যেককেই আল্লাহ যেন ভালো রাখেন৷ অসহায়ত্বের পাশে দাড়ানোর সুযোগ দেন৷ শিশু ফাহিম হোসেন বলেন, রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে খুব কষ্ট পেয়েছি এখন আর ভ্যান চালাতে হবে না৷ আমি আবার আগের মত লেখা পড়া করতে পারবো৷ অসুস্থ মা’কে নিয়ে আর দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না ফলের দোকান পেয়ে অনেক খুশি৷ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, মানুষ মানুষের জন্য তার দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছেন ‘আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরা৷ অবিভাবক হারানো পরিবারটিকে আর্থিক স্বচ্ছলতা রাখার জন্য ফলের দোকান করে দেওয়া এক মহতী উদ্যোগ ৷

সংগঠনের সকল কেই স্যালুট জানান তিনি এবং এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন৷ আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সদস্য ফাহাদ হোসেন বলেন, রাস্তায় ভ্যান চালানের সময় শিশু ফাহিম ‘আমরাবন্ধু ফাউন্ডেশন’ এর নজরে আসে৷ তার অসুস্থ বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় পরিবারটির খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সহায়তা করা হয়৷ চলতি বছর রমজান মাসে বাবা মারা যাওয়ায় ফাহিমের পরিবারটির আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়ে৷ ফাহিমের লেখা পড়ার খরচ নির্বাহ করতে ও তার পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান ও বিক্রির ফল উপহার দেয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি ফাহিমের মা’এর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নূরে আলমের সহায়তায় বিধবা ও চিকিৎসা ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এসময় উপস্থিত ছিলেন, আমরা বন্ধু ফাউন্ডেশনের সাতক্ষীরার সিনিয়র সদস্য আব্দুল কাদের৷ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সোহাগ হোসেন, রজু আহমেদ, জাহাঙ্গীর হোসেন, রাব্বি, গ্যারেজ মালিক জুরমত আলী প্রমূখ৷




Leave a Reply

Your email address will not be published.