সমাজের আলো : হোটেল মালিক ও বাবুর্চির কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নারী শ্রমিককে মারপিট করার ফলে মারাত্মক আহত ও জখম অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ওই নারী হোটেল শ্রমিক।

অভিযোগে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শহরতলির লাবসা বাইপাস সড়কের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত হোটেল সিটি ইন-এ নারী শ্রমিক হিসেবে কয়েক মাস আগে কাজ নেন আশাশুনি উপজেলার শীতলপুর গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর মেয়ে তিন সন্তানের জননী নাসিমা খাতুন (৩৮)। মারাত্মক জখম নাসিমা সোমবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বেডে শুয়ে কাঁতরাতে কাঁতরাতে বলেন, তিনি ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার প্রতিদিনের ন্যায় হোটেল সিটি ইন-এ কাজে যান। কাজ করতে থাকার এক পর্যায়ে বাবুর্চি আজিজুল ইসলাম তাকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

এ সময় সে বাঁধা দিলে তাকে মারপিট করে এবং গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে ছ্যাকা দেয়। গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়ায় তার ডান স্তনের অর্ধেক অংশ পুড়ে গেছে। এবং বুক, পিট, ঘাড় ও হাতের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় দাগ হয়ে গেছে। এই ঘটনার পর হোটেল মালিক মফিজুল ইসলাম ও কবির হোসেন তাকে সারাদিন হোটেলের একটি রুমে আটকিয়ে রাখে। এর ফলে তার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এক পর্যায়ে সহকর্মীদের সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে অন্যদের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

নাসিমার স্বামী ইসরাফিল ইসলাম জানান, তিনি খবর পেয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তার স্ত্রী ওই হোটেলে কাজ নিয়ে পাশর্^বর্তী লাবসায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

নাসিমা জানান, হোটেল সিটি ইনের দুই মালিক মালিক মফিজুল ইসলাম ও কবির হোসেন এবং বাবুর্চি আজিজুল ইসলাম প্রায়ই তাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সে রাজি না হওয়ায় তাকে ঘটনার দিন এভাবে মারপিট করা হয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নাসিমাকে সেবাকারী সহকর্মী ওই হোটেলের সাবেক কর্মী রওশান আরা ও বিউটি জানান, তাদের সাথেও একইরকম আচরণ করার এক পর্যায়ে তারা কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। তারও এর বিচার চান।

সরজমিনে হোটেল সিটি ইন-এর অভিযুক্ত বাবুর্চি আজিজুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ওকে (নাসিমা) জড়িয়ে ধরেছিলাম। তখন সে আমাকে মারার জন্য উদ্যত্ত হলে আমি মারপিট করেছি। সেও আমাকে মেরেছে। তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করেছি, তবে ধর্ষণ করিনি। আমি ভুল করেছি, আর কখনও এরকম কাজ করবো না’।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *